
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
মহামারি আর ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে দেখা দেওয়া গভীর অর্থনৈতিক সঙ্কট মোকাবিলায় পাকিস্তানের সরকার ‘জরুরি অর্থনৈতিক পরিকল্পনা’র আওতায় ৩৮টি অপ্রয়োজনীয় বিলাসবহুল পণ্যের আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। বৃহস্পতিবার দেশটির তথ্যমন্ত্রী মরিয়ম আওরঙ্গজেব পণ্য আমদানির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের এই ঘোষণা দিয়েছেন।
ইসলামাবাদে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই ঘোষণা দেন। এর কিছুক্ষণ পর দেশটির প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ টুইটারে এক বার্তায় বলেন, এই সিদ্ধান্ত দেশের মূল্যবান বৈদেশিক মুদ্রা বাঁচাবে।
তিনি বলেন, ‘আমরা মিতব্যয়িতার চর্চা করবো এবং আর্থিকভাবে শক্তিশালী ব্যক্তিদের এই প্রচেষ্টায় নেতৃত্ব দিতে হবে, যাতে আমাদের মধ্যে কম সুবিধাপ্রাপ্তদের পিটিআই সরকারের চাপিয়ে দেওয়া এই বোঝা বহন করতে না হয়। দেশের মানুষ সমাধান এবং দৃঢ় সংকল্পের মাধ্যমে এসব চ্যালেঞ্জ অতিক্রম করবে।
ডলারের বিপরীতে পাকিস্তানি রুপির ঐতিহাসিক পতনের দিনে বৃহস্পতিবার দেশটির সরকার অপ্রয়োজনীয় বিলাসবহুল পণ্যের আমদানি নিষিদ্ধের এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বৃহস্পতিবার দিনের শুরুতে ডলারের বিপরীতে রুপির মান ছিল ১৯৮ দশমিক ৩৯; কিন্তু মাত্র কয়েক ঘণ্টার মধ্যে এই মান ২০০ ছাড়িয়ে যায়।
সংবাদ সম্মেলনে দেশটির তথ্যমন্ত্রী জাতিকে আশ্বস্ত করে বলেন, পাকিস্তানের অর্থনীতি স্থিতিশীল করতে দিনরাত কাজ করছেন প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ। আওরঙ্গজেব বলেন, নতুন পরিকল্পনার আওতায় সব ধরনের অপ্রয়োজনীয় বিলাসবহুল পণ্য-সামগ্রী আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
আমদানি নিষিদ্ধ করা হয়েছে যেসব পণ্যের
• গাড়ি
• মোবাইল ফোন
• গৃহস্থলি আসবাবপত্র
• ফলমূল এবং শুকনো ফল (আফগানিস্তান ব্যতীত)
• ক্রোকারি
• ব্যক্তিগত অস্ত্র ও গোলাবারুদ
• জুতা
• ঝাড়বাতি এবং বৈদ্যুতিক বাল্ব
• হেডফোন ও লাউডস্পিকার
• সস
• দরজা জানালার ফ্রেম
• ভ্রমণের ব্যাগ এবং স্যুটকেস
• প্রসাধন সামগ্রী
• মাছ
• কার্পেট
• তাজা ফল
• টিস্যু পেপার
• ফার্নিচার
• শ্যাম্পু
• মিষ্টান্ন
• বিলাসবহুল তোষক ও স্লিপিং ব্যাগ
• জ্যাম ও জেলি
• কর্নফ্লেক্স
• টয়লেট সামগ্রী
• হিটার, ব্লোয়ার
• সানগ্লাস
• রান্নাঘরের জিনিসপত্র
• সোডা পানি
• হিমায়িত মাংস
• জুস
• পাস্তা
• আইসক্রিম
• সিগারেট
• শেভিং পণ্য
• বিলাসবহুল চামড়ার পোশাক
• বাদ্যযন্ত্র
• সেলুনের পণ্যসামগ্রী। যেমন হেয়ার ড্রায়ার ইত্যাদি
• চকোলেট
পাকিস্তানের তথ্যমন্ত্রী আওরঙ্গজেব বলেছেন, দেশে বর্তমানে অত্যন্ত জরুরি পরিস্থিতি চলছে। পাকিস্তানিদের অর্থনৈতিক পরিকল্পনা মেনে ত্যাগ স্বীকার করতে হবে। এই নিষেধাজ্ঞার ফলে প্রায় ৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার সাশ্রয় হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।