• ঢাকা
  • শনিবার:২০২৩:সেপ্টেম্বর || ১৭:২৭:২৩
প্রকাশের সময় :
মে ১৯, ২০২২,
১০:১৯ অপরাহ্ন

সর্বশেষ আপডেট :
মে ১৯, ২০২২,
১০:১৯ অপরাহ্ন

৪১৮ বার দেখা হয়েছে ।

ছাড় পাচ্ছে সিন্ডিকেট ও মজুতদাররা

ছাড় পাচ্ছে সিন্ডিকেট ও মজুতদাররা

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক

বিভিন্ন সময় নিত্যপণ্যের বাজারে অস্থিরতা তৈরি করেন ব্যবসায়ীরা। কৃত্রিম সংকট তৈরি, অবৈধভাবে বেশি দাম রাখাসহ নানা কারসাজি করা হয়। তাদের এসব কর্মকাণ্ডে বিপাকে পড়ে সাধারণ মানুষ। সে ক্ষেত্রে অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে সরকার ব্যবস্থা নিলেও আইনের যথাযথ প্রয়োগ হয় না। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে জরিমানা আর মামলার মধ্যেই থাকে সীমাবদ্ধ। ফলে একই অপরাধ বারবার চালিয়ে যান ব্যবসায়ীরা। এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন ভোক্তারা।

তারা বলছেন, আইনের যথাযথ প্রয়োগ না থাকায় এই সিন্ডিকেট আরও শক্তিশালী হচ্ছে। বিশেষ ক্ষমতা আইনে সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড, এমনকি যাবজ্জীবন এবং সর্বনিম্ন ১৪ বছরের সাজা থাকার পরও কোনো ধরনের পদক্ষেপ চোখে পড়ছে না।

গত কয়েকদিন আগে প্রতিযোগিতা কমিশন মামলা করেছে। আমার কথা হলো, তারা সর্বোচ্চ শাস্তির বিধান থাকার পরও অল্প অল্প সাজা বা জরিমানা করে ছেড়ে দিচ্ছে, এটা আইনের যথাযথ প্রয়োগ না। হাইকোর্ট বলেছিলেন আইন অনুযায়ী সাজা দিতে। কিন্তু কমিশন ফরমালিটির জন্য একদিনে আটটা দোকান বা ডিলারের বিরুদ্ধে মামলা করলো। তারা বাস্তবিক কোনো আইন প্রয়োগ করেনি।

আইনজীবীদের দাবি, সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ডের আইন পাশ কাটিয়ে ছাড় পাচ্ছেন ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট ও মজুতদাররা। মূলত অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর, প্রতিযোগিতা কমিশন ও খাদ্য অধিদপ্তর।

দেশে ভোজ্যতেলের সংকট তৈরি হওয়ার পর এ নিয়ে আলোচনা শুরু হয়। রমজান মাস থেকে সারাদেশে দেখা দেয় সয়াবিন তেলের সংকট। দাম বাড়ানোর জন্য তেল মজুত শুরু করেন ব্যবসায়ীরা। ফলে বাজার স্বাভাবিক রাখতে ঈদের পর অভিযানে নামে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর।

এসময় দেশের বিভিন্ন স্থানে বিপুল পরিমাণ মজুত করা সয়াবিন তেলের সন্ধান মেলে। কিন্তু অসাধু ব্যবসায়ীদের জরিমানা করে ছেড়ে দেওয়া হয়। কোথাও কোথাও মামলাও হয়। তবে জরিমানা করা সঠিক হচ্ছে না বলে মনে করছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবীরা। তাদের কঠিন শাস্তির আওতায় আনার কথা বলছেন তারা। আইনজীবীরা বলছেন, জরিমানার পাশাপাশি কারাদণ্ড দেওয়া জরুরি। এতে বাজার স্থিতিশীল রাখা যেতে পারে।

খুলনাতে যে বড় তেলের মজুত পেলো সেখানে স্পেশাল পাওয়ার অ্যাক্টে (বিশেষ ক্ষমতা আইন) মামলা করা উচিত ছিল। এছাড়া বিভিন্ন জেলায় যে হারে তেল পেলো, সেখানেও এই আইনে মামলা করতে পারতো। কিন্তু সেটি হয়নি।

নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের বাজারের অস্থিরতা গড়ায় হাইকোর্ট পর্যন্ত। এ নিয়ে রিটও হয়। ফলে ১৫ মার্চ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বাড়িয়ে বাজার অস্থিতিশীল করা অবৈধ জোটবদ্ধ (সিন্ডিকেশন) ব্যবসা বন্ধে সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের ব্যর্থতা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয় রুলে। সেই সঙ্গে দাম বাড়িয়ে বাজার অস্থিতিশীল করা দুষ্কৃতকারীদের খুঁজে বের করে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশনকে বলা হয়।

এছাড়া সয়াবিন তেল এবং পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে মনিটরিং সেল গঠন ও নীতিমালা তৈরি নিয়ে মজুতদারদের বিরুদ্ধে কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে সিন্ডিকেটে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়।

এ বিষয়ে ২৬ এপ্রিলের মধ্যে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব ও বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশনকে প্রতিবেদন জমা দিতে বলেন হাইকোর্ট।

এ রিটের শুনানি ও আদেশের দিন ১৫ মার্চ হাইকোর্টের বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি এস এম মনিরুজ্জামানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

আদালতে ওইদিন রিটকারীর পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী অ্যাডভোকেট সৈয়দ মহিদুল কবির ও আইনজীবী অ্যাডভোকেট সৈয়দা নাসরিন। তাদের সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী অ্যাডভোকেট মনির হোসেন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল প্রতিকার চাকমা। তার সঙ্গে ছিলেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল আবুল কালাম খান।

রিটকারী আইনজীবী সৈয়দ মহিদুল কবির জাগো নিউজকে বলেন, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মজুতদারদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।

তিনি জানান, বাজার অস্থিতিশীল করা দুষ্কৃতকারীদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিতে বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশনকে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়েছিল রুলে।

এছাড়া অবৈধ জোটবদ্ধ ব্যবসা প্রতিরোধে প্রতিযোগিতা আইন, ২০১২-এর ২১ (১) ধারা অনুযায়ী প্রয়োজনীয় প্রবিধান প্রণয়নে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, একই সঙ্গে চাল, ডাল, গম, চিনি, পেঁয়াজ ও ভোজ্যতেলের মতো পণ্য বিক্রির ওএমএস (খোলাবাজারে বিক্রয়) নীতিতে রেশন কার্ডের বিধান অন্তর্ভুক্ত করতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, রুলে সে প্রশ্নও রাখা হয়। সেই সঙ্গে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের নিষ্ক্রিয়তা ও ব্যর্থতা কেন অবৈধ ঘোষণা হবে না, তাও জানতে চাওয়া হয় রুলে।

বাণিজ্য সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব, খাদ্য সচিব, বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশনের চেয়ারপারসন, ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) চেয়ারম্যান ও ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই সভাপতিকে এই রুলের জবাব দিতে বলা হয়।

সয়াবিন তেলের দাম বাড়ার ঘটনাটি উচ্চ আদালতের নজরে এনে ৬ মার্চ হাইকোর্টে রিটটি করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মনির হোসেন, সৈয়দা নাসরিন, সৈয়দ মহিদুল কবীর ও মোহাম্মদ উল্লাহ। যার শুনানির উদ্যোগ নেওয়া হবে বলে জানান আইনজীবী।

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম জাগো নিউজকে বলেন, আমার মনে হয় তারা (ব্যবসায়ীরা) ফৌজদারি অপরাধ করছে। ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইনে নয়, মজুতদারদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি আইনে মামলা করার পক্ষে মত দেন তিনি।

তিনি বলেন, এটা সরাসরি অ্যাকশন, ক্রিমিনাল প্রসিডিংয়ে যেতে হবে। অন্যথায় শুধু জরিমানা করে ছেড়ে দিলে এগুলো বন্ধ হবে না।

সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সৈয়দ মহিদুল কবীর বলেন, গত কয়েকদিন আগে প্রতিযোগিতা কমিশন মামলা করেছে। আমার কথা হলো, তারা সর্বোচ্চ শাস্তির বিধান থাকার পরও অল্প অল্প সাজা বা জরিমানা করে ছেড়ে দিচ্ছে, এটা আইনের যথাযথ প্রয়োগ না। হাইকোর্ট বলেছিলেন আইন অনুযায়ী সাজা দিতে। কিন্তু কমিশন ফরমালিটির জন্য একদিনে আটটা দোকান বা ডিলারের বিরুদ্ধে মামলা করলো। তারা বাস্তবিক কোনো আইন প্রয়োগ করেনি।

তিনি আরও বলেন, ২৬ এপ্রিল নিত্যপণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণের নির্দেশনা চেয়ে করা রিটের পরিপ্রেক্ষিতে জারি করা রুলের শুনানি হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু শুনানি হয়নি। হয়তো আগামী সপ্তাহে ওই রিটের শুনানি হতে পারে। তাই কম্পিটিশন কাউন্সিল তড়িঘড়ি করে মামলা করেছে বলে আমার ধারণা।

সুপ্রিম কোর্টের এই আইনজীবী বলেন, ভোক্তা অধিকার ও কম্পিটিশন কাউন্সিল দুই পক্ষই রিটের বিবাদী। কিন্তু তারা প্রয়োগ করছে ২০১৮ সালের একটি আইন। ওই আইনে খুব বেশি দণ্ড নেই, অল্প কিছু দিনের সাজার বিধান রয়েছে। ‘স্পেশাল পাওয়ার অ্যাক্টের টোয়েন্টি ফাইভের সাব সেকশন টু’ এর বা ‘টোয়েন্টি ফাইভ ওয়ান’ অনুযায়ী যাবজ্জীবন বা ১৪ বছরের কারাদণ্ড এগুলোর কোনোটাই দেওয়া হয়নি। তার মানে তাদের অবস্থা কানামাছি খেলার মতো।

নিরাপদ খাদ্য নিয়ে কাজ করা আইনজীবী মহিদুল কবির বলেন, খুলনাতে যে বড় তেলের মজুত পেলো সেখানে স্পেশাল পাওয়ার অ্যাক্টে (বিশেষ ক্ষমতা আইন) মামলা করা উচিত ছিল। এছাড়া বিভিন্ন জেলায় যে হারে তেল পেলো, সেখানেও এই আইনে মামলা করতে পারতো। কিন্তু সেটি হয়নি।

১২ মে খুলনায় দুই লাখ ৬৩ হাজার লিটার ভোজ্যতেল উদ্ধার করে র‌্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত। এসময় তিন প্রতিষ্ঠানকে এক লাখ ৬০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।

দেশজুড়ে এসব অভিযান নিয়ে প্রশ্ন তুলে এই আইনজীবী বলেন, সর্বোচ্চ অপরাধে সর্বনিম্ন সাজা এটা কোন ধরনের বিধান। রিটের বিষয়ে সরকারের পক্ষ থেকে একটা জবাবও এসেছে। কিন্তু সেটি রাষ্ট্রপক্ষই আদালতে উপস্থাপন করেনি। ২৬ এপ্রিল আনার কথা ছিল, সেটি আনা হয়নি। ঈদের কারণে হয়তো আসেনি। তবে এখন আসতে পারে বলে আশা করছি।

নিত্যপণ্যের দাম বাড়ানো ও মজুতদারদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া উচিত- এ বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া জাগো নিউজকে বলেন, কনজুমার রাইটের যে আইন আছে, সে আইনের মধ্যে তাদের অ্যাডমেনিস্ট্রেটিভ পাওয়ার দেওয়া আছে। তবে মামলা করার ক্ষমতা তাদের দেওয়া হয়নি। ফলে তারা অ্যাডমেনিস্ট্রেটিভ শাস্তি যেটা, সর্বোচ্চ দুই লাখ টাকা জরিমানার মধ্যেই সীমাবদ্ধ।

তিনি বলেন, এর বাইরে ওনাদের কোনো কিছু করার নেই। কিন্তু এটা যথাযথ ব্যবস্থা না। মাঠপর্যায়ে একটা নেটওয়ার্ক আছে ভোক্তা অধিকারের অধীনে, তারা চাইলে এ বিষয়গুলো নিয়ে গবেষণা করতে পারে। এছাড়া আইনে বাজার নিয়ন্ত্রণে জেলা প্রশাসকের (ডিসি) অধীনে একটি সাব কমিটি থাকার কথা, যে কমিটি বাজার মনিটরিং করবে। এরকম আইনে অনেক কিছু আছে। কিন্তু আমরা কার্যকর কিছু দেখছি না।

বিশেষ ক্ষমতা আইন নিয়ে তিনি বলেন, এই আইনে মজুত সংক্রান্ত বিধান রয়েছে। সেটা প্রয়োগে ভোক্তা অধিদপ্তরের মুখোমুখি হওয়ার প্রয়োজন নেই। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীই নিতে পারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ। তারা মজুতদারের বিরুদ্ধে মামলা করতে পারে। তাদের বিচারের মুখোমুখি করতে পারে। এছাড়া কোনো এলাকার জেলা প্রশাসক (ডিসি) কিংবা যে কোনো সরকারি অধিদপ্তরের কর্মকর্তা বা এসিল্যান্ড ব্যবস্থা নিতে পারেন।

এছাড়া বর্তমানে গম নিয়েও ব্যবসায়ীরা বিশৃঙ্খলা করতে পারে বলেও মন্তব্য করেন এই আইনজীবী। এক্ষেত্রে স্পেশাল পাওয়ার অ্যাক্টে মামলা করা যেতে পারে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া আরও বলেন, কম্পিটিশন অ্যাক্ট-২০১২ (২০১২ সালের প্রতিযোগিতা কমিশন আইন) আইন আছে। এর অধীনে কমিশনও আছে একটি। এদের কাজ হচ্ছে যাতে কেউ একচেটিয়া বাজারজাত করতে না পারে সেটা দেখা, বাজারে যাতে প্রতিযোগিতা থাকে।

তিনি বলেন, এই কমিশনকে মামলা করার এখতিয়ার দেওয়া গেলে তারা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। কিন্তু কমিশনের যেহেতু এই ক্ষমতা নেই, তাই স্পেশাল অ্যাক্টের বিধান রয়েছে সেগুলোর যথাযথ প্রয়োগ করা উচিত।

আইনে কী আছে

২০০৯ সালের ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইনে কোনো পণ্য গুদামজাত করার অপরাধে কারখানা, দোকান, গুদাম সাময়িক বন্ধ করা, পণ্য যথাযথভাবে বিক্রি ও সরবরাহ না করলে সর্বোচ্চ এক বছরের শাস্তি ও জরিমানার বিধান রয়েছে। তবে এই আইনে মজুতদার ও কালোবাজারি নিয়ে কিছু উল্লেখ নেই। এজন্য অবৈধ মজুতদার ও কালোবাজারে বিক্রির বিরুদ্ধে আইনটির প্রয়োগ নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে।

১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনে অবৈধ মজুত ও কালোবাজারির শাস্তি সম্পর্কে বলা হয়েছে। আইনে ২ ধারায় মজুতের সংজ্ঞায় বলা হয়েছে, ‘কোনো ব্যক্তি যে কোনো সময় মজুত বা মজুত রাখার অনুমতিপ্রাপ্ত জিনিসের সর্বাধিক পরিমাণের চেয়ে বেশি মজুত বা সংরক্ষণ করা।’

একই ধারায় কালো-বাজারে লেনদেনের সংজ্ঞায় বলা হয়েছে, ‘নির্ধারিত সর্বোচ্চ মূল্যের চেয়ে বেশি মূল্যে বাণিজ্যের উদ্দেশ্যে কোনো কিছু বিক্রি বা ক্রয় করা।’

শাস্তির বিষয়ে আইনটির ২৫(১) ধারায় বলা হয়েছে, ‘কেউ মজুত বা কালোবাজারের অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হলে সে ব্যক্তি মৃত্যুদণ্ড, যাবজ্জীবন কারাদণ্ড বা ১৪ বছর কারাদণ্ড, তদুপরি জরিমানার দণ্ডেও দণ্ডিত হবে। তবে শর্ত থাকে যে, মজুতের অভিযোগে অভিযুক্ত ব্যক্তি যদি প্রমাণ করে যে, আর্থিক বা অন্যবিধ লাভ করার উদ্দেশ্যে নয়, বরং অন্য কোনো উদ্দেশ্যে মজুত করেছিল, তবে সে তিন মাস পর্যন্ত কারাদণ্ডে ও তদুপরি জরিমানার দণ্ডে দণ্ডিত হবেন ‘

একই আইনের ২৫ডি ধারায় বলা আছে, ‘বিশেষ ক্ষমতা আইনে যেসব কাজকে অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হয়েছে, সেসব কাজ করার চেষ্টা করা বা কাজ করার সহযোগিতা করাও অপরাধ হবে।’

মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের বিষয়ে আইনের ৩৪ (ক) ধারায় বলা আছে, দণ্ড কার্যকরে ফাঁসি বা নির্ধারিত পদ্ধতি অনুসারে গুলি দণ্ড কার্যকর হতে পারে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *