• ঢাকা
  • শনিবার:২০২৩:সেপ্টেম্বর || ১৭:৪১:২৪
প্রকাশের সময় :
এপ্রিল ১৪, ২০২২,
২:০৭ অপরাহ্ন

সর্বশেষ আপডেট :
এপ্রিল ১৪, ২০২২,
২:০৭ অপরাহ্ন

৩৮৯ বার দেখা হয়েছে ।

বন্যপ্রাণী সংরক্ষণে সরকার সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছে

বন্যপ্রাণী সংরক্ষণে সরকার সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছে

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী মো: শাহাব উদ্দিন বলেছেন, বন্যপ্রাণী সংরক্ষণে সরকার সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছে। এলক্ষ্যে বন্যপ্রাণীর আবাসস্থল সংরক্ষণ ও উন্নয়নের লক্ষ্যে বাংলাদেশ সরকার ৫১টি এলাকাকে রক্ষিত এলাকা হিসেবে ঘোষণা করেছে। বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ কার্যক্রমকে উৎসাহিত করার লক্ষ্যে বাংলাদেশ সরকার “বঙ্গবন্ধু এওয়ার্ড ফর ওয়াইল্ডলাইফ কনজারভেশন” প্রবর্তন করেছে। বন্যপ্রাণী অপরাধ উদঘাটনে তথ্য (প্রদানকারী) পুরস্কার বিধিমালা, ২০২০ প্রণয়ন করা হয়েছে। বন্যপ্রাণী পাচার রোধে এবং অপরাধ নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিট কাজ করছে। বন্যপ্রাণী সংরক্ষণে বনবিভাগের কর্মীদের আরও আন্তরিকভাবে কাজ করার নির্দেশ প্রদান করে মন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্ক, গাজীপুরে জেব্রা মৃত্যুর মতো অন্য কোনও অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা যেনো আর না ঘটে সেটি নিশ্চিত করতে হবে।

“বিপন্ন বন্যপ্রাণী রক্ষা করি, প্রতিবেশ পুনরুদ্ধারে এগিয়ে আসি।” প্রতিপাদ্য ধারণ করে বিশ্ব বন্যপ্রাণী দিবস ২০২২ উপলক্ষ্যে বন অধিদপ্তরে আয়োজিত আলোচনা সভায় ঢাকাস্থ তার সরকারি বাসভবন হতে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে  প্রধান অতিথির বক্তব্যে পরিবেশমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

বনমন্ত্রী বলেন, বন্যপ্রাণী ও এর আবাসস্থল সংরক্ষণের জন্য বর্তমানে ‘বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও আবাসস্থল উন্নয়ন প্রকল্প’, ‘সুফল প্রকল্প’ এর মাধ্যেম বিভিন্ন ধরণের কাজ চলমান আছে। হাতি, বাঘ সহ দেশের বন্যপ্রাণীগুলোকে রক্ষার জন্য দৃঢ়প্রতিজ্ঞ হয়ে সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে। বন্যপ্রাণীর সম্ভাব্য করিডোর নিশ্চিত করা, ক্যমেরা ট্র্যাপিং এর মাধ্যমে আবাস সংযোগের বর্তমান অবস্থা নিরূপণের জন্য সম্ভাব্যতা সমীক্ষা প্রকল্পটি সম্প্রতি সমাপ্ত হয়েছে। বন্যপ্রাণী ও মানুষ দ্বন্দ্ব নিরসনের জন্য বন্যপ্রাণী দ্বারা আক্রান্ত জানমালের ক্ষতিপূরণ বিধিমালা, ২০২১ অনুযায়ী ক্ষতিপূরণ প্রদান করা হচ্ছে। বন্যপ্রাণী ও জীববৈচিত্র্যের সুষ্ঠ ব্যবস্থাপনা-পরিচালনার জন্য প্রশিক্ষিত ও দক্ষ জনশক্তি সৃষ্টি এবং মানসম্মত গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনার লক্ষ্যে ২০১৯ সালে গাজীপুরে শেখ কামাল ওয়াইল্ডলাইফ সেন্টার প্রতিষ্ঠা করা হয়। বাংলাদেশের ১৬১৯ প্রজাতির বন্যপ্রাণীর অবস্থা মূল্যায়নপূর্বক বিপন্নপ্রায় প্রজাতির লাল তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছে।

পরিবেশমন্ত্রী বলেন, মহাবিপন্ন বাংলা শকুন রক্ষায় ২০১৪ সালে দেশের দুটি অঞ্চলকে শকুনের জন্য নিরাপদ এলাকা  হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। শকুনের জন্য ক্ষতিকারক ভেটেরিনারী ওষুধ ডাইক্লোফেনাক ও কিটোপ্রফেনের উৎপাদন  দেশব্যাপী নিষিদ্ধ করা হয়েছে। পরিযায়ী পাখি সংরক্ষণের জন্য ৬টি এলাকাকে ‘ইস্ট এশিয়ান অস্ট্রালেশিয়ান ফ্লাইওয়ে সাইট’ ঘোষণা করা হয়েছে।  ডলফিন, তিমি, হাঙ্গর এবং অন্যান্য সামুদ্রিক প্রাণী সংরক্ষণের জন্য বঙ্গোপসাগরের ‘সোয়াচ অব নো গ্রাউন্ড’ এলাকার ১৭৩৮ বর্গ কিলোমিটার  এবং সেন্টমার্টিন দ্বীপ সংলগ্ন বঙ্গোপসাগরের ১৭৪৩ বর্গ কিলোমিটার এলাকাকে ‘মেরিন প্রটেকটেড এরিয়া’ হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে।

বনমন্ত্রী বলেন, হাতি সংরক্ষণের জন্য চট্টগ্রামের চুনতি বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্যকে মাইক (MIKE) সাইট ঘোষণা করা হয়েছে। হাতি সমৃদ্ধ বনাঞ্চলে হাতির খাদ্য উপযোগী বাগান সৃজন করা হচ্ছে। মন্ত্রী এসময় হাতি সংরক্ষণ ও হাতি-মানুষ দ্বন্দ্ব নিরসনকল্পে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও সাধারণ জনগণের সমন্বয়ে ২১ ডিসেম্বর ২০২১ তারিখ চট্রগ্রাম দক্ষিণ বন বিভাগ এর আওতাধীন সাতকানিয়ায় অনুষ্ঠিত এক মতবিনিময় সভায়  অংশগ্রহণের কথা উল্লেখ করেন।  তিনি বলেন, এসময় বন্যপ্রাণী দ্বারা ক্ষতিগ্রস্থদের মাঝে ৩ লাখ ৪৫ হাজার টাকার চেক হস্তান্তর করা হয়। মন্ত্রী বলেন, এসব কার্যক্রমসমূহ সফলতার সাথে সম্পন্ন করার মাধমে দেশের বন্যপ্রাণীর অবস্থা উন্নত হচ্ছে।

বন অধিদপ্তরের প্রধান বন সংরক্ষক মো: আমীর হোসাইন চেীধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি সাবের হোসেন চৌধুরী, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব মো: মোস্তফা কামাল, অতিরিক্ত সচিব(প্রশাসন) ইকবাল আবদুল্লাহ হারুন এবং  অতিরিক্ত সচিব(পরিবেশ) মোঃ মনিরুজ্জামান । আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আইইউসিএন বাংলাদেশ এর কান্ট্রি রিপ্রেজেনটেটিভ রাকিবুল আমিন এবং প্রকৃতি ও জীবন ফাউন্ডেশন এর চেয়ারম্যান জনাব মুকিত মজুমদার বাবু প্রমুখ।

উল্লেখ্য, বিশ্ব বন্যপ্রাণী দিবস উপলক্ষ্যে আলোচনা সভা ছাড়াও বন্যপ্রাণীর প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়। এছাড়াও আলোচনা সভার পরে বিভিন্ন ধরনের বন্য পাখি অবমুক্ত করে অতিথিবৃন্দ। ঢাকার পাশাপাশি দেশের ২৪ টি জেলা ও বিভাগীয় শহরে বিশ্ব বন্যপ্রাণী দিবসের অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *